অকাল জরা বা প্রজরা (ইংরেজি: Progeria) একটি খুবই বিরল বংশাণুগত রোগ যেখানে রোগী খুব অল্প বয়সে বুড়িয়ে যায়।[৫] একাধিক অকালজরাকল্প সংলক্ষণ (প্রোজেরয়েড সিনড্রোম) আছে যাদের মধ্যে অকাল জরা অন্যতম।[৬] অকাল জরার ইংরেজি পরিভাষা প্রোজিরিয়া (Progeria) শব্দটির উৎপত্তি হল গ্রিক শব্দ "pro" (πρό), যার অর্থ পূর্বে বা অপরিপক্ক এবং "gēras" (γῆρας), যার অর্থ বৃদ্ধ বয়স।[৭] রোগটি খুবই বিরল এবং খুব কমসংখ্যক শিশু এই রোগ নিয়ে জন্মায়।[৮] অকাল জরাগ্রস্ত রোগী সাধারণত তেরো-চৌদ্দ থেকে বিশ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকে।[৯][১০]
এটি একটি বংশাণুগত রোগ যা সাধারণত নতুন পরিব্যক্তির ফলে হয়। খুব বিরল ক্ষেত্রে এটি বংশীয় হয় কারণ এর বাহক সাধারণত সন্তান জন্মদান পর্যন্ত বেঁচে থাকে না। যদিও অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়া সকল রোগকে অকাল জরা বলা হয় তবে প্রায়শই অকাল জরা পরিভাষাটি দিয়ে নির্দিষ্টভাবে হাচিনসন-গিলফোর্ড অকাল জরা সংলক্ষণ (HGPS) কে বোঝায়। বিজ্ঞানীগণ অকাল জরা নিয়ে বিশেষভাবে আগ্রহী কারণ তাঁদের ধারণা এই রোগ নিয়ে গবেষণা করলে মানুষের স্বাভাবিক বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা যাবে।[১১][১২][১৩]
বিজ্ঞানী জোনাথন হাচিনসন ১৮৮৬ সালে প্রথম অকাল জরা রোগের বর্ণনা দেন।[১৪] আরেক বিজ্ঞানী হেস্টিংস গিলফোর্ড ১৮৯৭ সালে পৃথকভাবে এই রোগের বর্ণনা দেন।[১৫] তাই পরবর্তীতে এই রোগের নাম হাচিনসন-গিলফোর্ড অকাল জরা সংলক্ষণ রাখা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ৪০ লক্ষ জন্মগ্রহণকারী শিশুর মধ্যে ১টি শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়।[১৬] বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় ১০০ জন অকাল জরা রোগী আছে বলে জানা যায়। মেডিকেল ইতিহাসে ১৪৩ জন অকাল জরা রোগীর কথা জানা যায়।[১৭]ভারতে একই পরিবারে পাঁচ জন অকাল জরার রোগী আছে।[১৮] এই রোগের কার্যকর কোনও চিকিৎসা নেই।[১৯] তাই এটি ভালো হওয়ার রোগ না। এই রোগীরা সাধারণত তেরো বছরের বেশি বাঁচে না।[২০] কমপক্ষে ৯০% রোগী ধমনী-কঠিনীভবনের (অ্যাথেরোসক্লেরোসিস) বিভিন্ন জটিলতা যেমন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, প্রভৃতি কারণে মারা যায়।
[২১]
↑Hutchinson J (১৮৮৬)। "Case of congenital absence of hair, with atrophic condition of the skin and its appendages, in a boy whose mother had been almost wholly bald from alopecia areata from the age of six"। Lancet। I (3272): 923। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(02)06582-0।